মার্কেটিং খরচ কমিয়ে আনার প্রুভেন ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা করা যেকোন বিজনেসের জন্যই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপুর্ণ। যেকোন পণ্যের অ্যাড রানের জন্য কনটেন্ট তৈরির সময় টার্গেট থাকে, অডিয়েন্স যাতে সেই কনটেন্টে আটকায়। তাহলে রিচ বেশি হবে, অ্যাংগেজ বাড়বে, সেল বাড়বে।
অ্যাড এ কাজ করছেনা, সবার টার্গেট থাকে বাজেট বাড়াতে হবে, অ্যাডের টার্গেটিং ঠিক করতে হবে। অথচ খুব গাফিলতি, যে কনটেন্ট দিয়ে অ্যাড চালাচ্ছে, সেটাতে মানুষ আটকানোর মত কোন রসদ আছে কিনা, তা নিয়ে গবেষনা করাতে। আসুন উদাহরণ দেইঃ
শুটকির বিজ্ঞাপন
শুটকির প্রচলিত কনটেন্ট: শুটকিতে কি উপকার, শুটকিতে কি কি উপাদান রয়েছে, শুটকি কতটুকু প্রিমিয়াম। এটাই হচ্ছে প্রচলিত শুটকির বিজ্ঞাপনের কনটেন্ট। যা নিয়ে মানুষ খুব টেনশনও করেনা, তাই এ তথ্য দিয়ে তৈরি কনটেন্টে মানুষ আটকানোর কোন লজিকই নাই। কিন্তু এরকম কনটেন্ট দিয়েই অ্যাড চালাচ্ছে উদ্যোক্তারা।
অ্যাংগেজমেন্ট কনটেন্ট কনসেপ্ট: শুটকি ভুনা রেসিপি, শুটকি দিয়ে লাউ এর তরকারি রান্নার রেসিপি। মূল কনটেন্টের ৯০% সময়ব্যাপী হবে এরকম রেসিপি কনটেন্ট, ১০% সময়ব্যাপী হবে, শুটকি কেন খাওয়া উচিত, এবং কেন আপনার ব্রান্ডের শুটকি কিনা উচিত। এভাবে কনটেন্ট স্ট্রাকচার তৈরি করলে সেই কনটেন্টে মানুষ আটকাতে বাধ্য। আর এটাই করে বড় ব্রান্ডগুলো।
সরিষা তেলের বিজ্ঞাপন
সরিষা তেলের প্রচলিত কনটেন্টঃ সরিষা তেলে কি উপকার, সরিষা তেলে কি কি উপাদান রয়েছে, সরিষা তেলে কতটুকু প্রিমিয়াম। এটাই হচ্ছে প্রচলিত সরিষা তেলের বিজ্ঞাপনের কনটেন্ট। যা নিয়ে মানুষ খুব টেনশনও করেনা, তাই এ তথ্য দিয়ে তৈরি কনটেন্টে মানুষ আটকানোর কোন লজিকই নাই। কিন্তু এরকম কনটেন্ট দিয়েই অ্যাড চালাচ্ছে উদ্যোক্তারা।
অ্যাংগেজমেন্ট কনটেন্ট কনসেপ্টঃ সরিষা তেল দিয়ে গরুর মাংস রান্নার রেসিপি, সরিষা তেল দিয়ে ভাজাপোড়া রান্না ইত্যাদি টাইপ রেসিপি। মূল কনটেন্টের ৯০% সময়ব্যাপী হবে এরকম রেসিপি কনটেন্ট, ১০% সময়ব্যাপী হবে, কেন সয়াবিনের বদলি সরিষা তেল খাওয়া উচিত, এবং কেন আপনার ব্রান্ডের সরিষা তেল কিনা উচিত। এভাবে কনটেন্ট স্ট্রাকচার তৈরি করলে সেই কনটেন্টে মানুষ আটকাতে বাধ্য। আর এটাই করে বড় ব্রান্ডগুলো।
মধুর বিজ্ঞাপন
মধু বিক্রির প্রচলিত কনটেন্টঃ মধুতে কি উপকার, মধুতে কি কি উপাদান রয়েছে, আপনার বিক্রিত মধুটি কতটুকু প্রিমিয়াম। এটাই হচ্ছে প্রচলিত মধু বিক্রির বিজ্ঞাপনের কনটেন্ট। মধুর উপকার নিয়ে মানুষ ১৪০০ বছর আগে থেকেই জানে। এটা নতুন কোন তথ্য না। তাই এ তথ্য নিয়ে তৈরি কনটেন্টে মানুষের আগ্রহ কম থাকে। তাই এ তথ্য দিয়ে তৈরি কনটেন্টে মানুষ আটকানোর কোন লজিকই নাই। কিন্তু এরকম কনটেন্ট দিয়েই অ্যাড চালাচ্ছে উদ্যোক্তারা।
অ্যাংগেজমেন্ট কনটেন্ট কনসেপ্টঃ চিনির বিকল্প হিসেবে মধু কি কি খাবারে ব্যবহার করে খাবার তৈরি করা যায়, সেরকম রেসিপি নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করলে মধু ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বাড়বে। মানুষ কনটেন্টগুলোতে অ্যাংগেজ হতে আগ্রহী হবে। মূল কনটেন্টের ৯০% সময়ব্যাপী হবে এরকম রেসিপি কনটেন্ট, ১০% সময়ব্যাপী হবে, কেন খাবারে চিনির বদলি মধু ব্যবহার করা উচিত, এবং কেন আপনার ব্রান্ডের মধু কিনা উচিত। এভাবে কনটেন্ট স্ট্রাকচার তৈরি করলে সেই কনটেন্টে মানুষ আটকাতে বাধ্য। আর এটাই করে বড় ব্রান্ডগুলো।
মশলার বিজ্ঞাপন
মশলা বিক্রির প্রচলিত কনটেন্টঃ মশলা কেন খাওয়া উচিত, আপনার বিক্রিত মশলাটি কতটুকু প্রিমিয়াম। এটাই হচ্ছে প্রচলিত মশলা বিক্রির বিজ্ঞাপনের কনটেন্ট। যা নিয়ে মানুষ খুব টেনশনও করেনা, তাই এ তথ্য দিয়ে তৈরি কনটেন্টে মানুষ আটকানোর কোন লজিকই নাই। কিন্তু এরকম কনটেন্ট দিয়েই অ্যাড চালাচ্ছে উদ্যোক্তারা।
অ্যাংগেজমেন্ট কনটেন্ট কনসেপ্টঃ মশলা ব্যবহার করে কালাভুনা তৈরি রেসিপি, টুনা মাছ রান্নার জন্য এই মশলা ব্যবহার করে রান্নার রেসিপি ইত্যাদি টাইপ রেসিপি। মূল কনটেন্টের ৯০% সময়ব্যাপী হবে এরকম রেসিপি কনটেন্ট, ১০% সময়ব্যাপী হবে, খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য কেন ভালো মানের মশলা ব্যবহার জরুরী, এবং কেন আপনার ব্রান্ডের মশলা কিনা উচিত। এভাবে কনটেন্ট স্ট্রাকচার তৈরি করলে সেই কনটেন্টে মানুষ আটকাতে বাধ্য। আর এটাই করে বড় ব্রান্ডগুলো।
মেহেদীর বিজ্ঞাপন
মেহেদী বিক্রির প্রচলিত কনটেন্টঃ মেহেদী কেন ব্যবহার করা উচিত, আপনার বিক্রিত মেহেদী কতটুকু প্রিমিয়াম। এটাই হচ্ছে প্রচলিত মেহেদী বিক্রির বিজ্ঞাপনের কনটেন্ট। মেহেদী কেন ব্যবহার করা উচিত, সে তথ্য জানা ছাড়াই মানুষ মেহেদী মনের ভালো লাগা থেকে ব্যবহার করে আসছে। সুতরাং যে তথ্য দিয়ে কনটেন্ট বানাচ্ছে, মানুষ সেই তথ্য জানার ব্যাপারে একটুও আগ্রহী না। তাই এ তথ্য দিয়ে তৈরি কনটেন্টে মানুষ আটকানোর কোন লজিকই নাই। কিন্তু এরকম কনটেন্ট দিয়েই অ্যাড চালাচ্ছে উদ্যোক্তারা।
অ্যাংগেজমেন্ট কনটেন্ট কনসেপ্টঃ মেহেদী দিয়ে বিভিন্ন সাজগোজ ডিজাইন দিয়ে কনটেন্ট তৈরি করলে সেটাতে মানুষের আগ্রহ হতে বাধ্য। মানুষ মেহেদী দিয়ে কি কি ডিজাইন করা যায়, সেটিই অনলাইনে খোজে। মূল কনটেন্টের ৯০% সময়ব্যাপী হবে এরকম ডিজাইন শিখানোর কনটেন্ট, ১০% সময়ব্যাপী হবে, কেন মেহেদী ব্যবহার করা উচিত, এবং কেন আপনার ব্রান্ডের মেহেদী কিনা উচিত। এভাবে কনটেন্ট স্ট্রাকচার তৈরি করলে সেই কনটেন্টে মানুষ আটকাতে বাধ্য। আর এটাই করে বড় ব্রান্ডগুলো।
মার্কেটিং খরচ আর কত বাড়াবেন?
আপনি অ্যাড এর পেছনে কিংবা মার্কেটিং খরচ এর পেছনে যে মূল্যবান অর্থ ব্যয় করছেন, সে তুলনায় ফলাফল অনেক কম পাচ্ছেন দেখে হতাশ হয়ে পড়ছেন, তাতে কনটেন্ট তৈরিতে কত বড় ভুল করছেন, সেই ভুলটা ধরিয়ে দেওয়াই এ কনটেন্টের উদ্দেশ্য।
অনেকেই ইতিমধ্যে ভুলগুলো শুধরিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। ঘরের বাজার এর নতুন চমৎকার অ্যাড চালাচ্ছে, ঘরের বাজারের সরিষা তেল দিয়ে গরুর মাংস রান্নার রেসিপি। পরিবর্তনটা শুরু করছে। অথচ এই কাজটা অনেক আগে থেকেই রাধুনি তাদের পণ্যের অ্যাড এর জন্য করে আসছে।
এবার পরিবর্তন আপনার ভিতরেও আসা উচিত। আপনার বিজ্ঞাপনে এমন কিছু দেন, যা মানুষকে সেই বিজ্ঞাপনে আটকাতে বাধ্য করবে। এখানে কয়েকটা প্রোডাক্ট নিয়ে বলেছি, আপনি আপনার পণ্য নিয়ে এরকম ভাবে ভাবা শুরু করেন। পরিবর্তনটা আনতেই হবে। মার্কেটিং খরচ আর কত বাড়াবেন?
কপিরাইটঃ মোহাম্মদ একরাম (কনটেন্ট রাইটার)
আরও পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া এঙ্গেজমেন্ট বাড়াবেন যেভাবে (২০২৪)
ঘর সাজাতেঃ Canvaswala || ব্যবসা বাড়াতেঃ Fixcave
Leave a Reply