মাইগ্রেন পেইন

মাইগ্রেন পেইন দ্রুত দূর করার সহজ উপায়

By Adivai_Admin September 18, 2024 No Comments 2 Min Read

মাইগ্রেন পেইন: মাইগ্রেনের ব্যথা আমাদের জীবনে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনের শুরুতে বা মাঝপথে হঠাৎ মাথায় তীব্র ব্যথা শুরু হতে পারে, যা দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। বেশিরভাগ মানুষই মাইগ্রেনকে সাধারণ মাথাব্যথা মনে করে, কিন্তু মাইগ্রেন আসলে অনেক বেশি তীব্র এবং যন্ত্রণাদায়ক। এই ব্যথা কখনো একপাশে, কখনো পুরো মাথায় অনুভূত হয় এবং সঙ্গে থাকে আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, বমি বমি ভাব ও শারীরিক অসুস্থতা।

মাথা ব্যাথা
Photo: Internet

আজকের এই ব্লগে আমরা মাইগ্রেন পেইন দ্রুত মুক্তির জন্য কিছু কার্যকর এবং সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করব, যা ঘরে বসেই প্রয়োগ করা যায়।

1. পর্যাপ্ত পানি পান করুন

পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন মাইগ্রেনের একটি সাধারণ কারণ। যখন শরীরে পর্যাপ্ত পানি থাকে না, তখন রক্ত সঠিকভাবে প্রবাহিত হয় না, এবং এটি মাথায় তীব্র ব্যথা তৈরি করতে পারে। তাই মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হলে প্রথম কাজ হলো প্রচুর পানি পান করা। দিনে কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে ব্যথা শুরু হওয়ার পর। এতে শরীর পুনরায় হাইড্রেটেড হয় এবং ধীরে ধীরে ব্যথা কমে আসবে।

২. অন্ধকার ও শান্ত পরিবেশে বিশ্রাম নিন

মাইগ্রেনের সময় আলো এবং শব্দ বেশ বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত আলো মাইগ্রেনকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই, মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হলে একটি শান্ত এবং অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিন। চোখ বন্ধ করে কয়েক মিনিট শুয়ে থাকুন। এই পদ্ধতিটি আপনার মস্তিষ্ককে শিথিল করতে সাহায্য করবে এবং ব্যথা ধীরে ধীরে কমে আসবে।

৩. মাথা ও গলায় ঠান্ডা চাপ দিন

মাইগ্রেনের সময় মাথা এবং গলায় ঠান্ডা চাপ প্রয়োগ করা একটি প্রাচীন এবং কার্যকর পদ্ধতি। এটি রক্তনালীগুলোকে সংকুচিত করে এবং ব্যথার মাত্রা কমায়। একটি ঠান্ডা গামছা বা বরফের প্যাক মাথার সামনের অংশে এবং গলার পেছনে ১৫-২০ মিনিটের জন্য চাপ দিয়ে রাখুন। এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত ব্যথা কমাতে সহায়ক।

৪. ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান করুন

ক্যাফেইন কখনো কখনো মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। অল্প পরিমাণে ক্যাফেইন রক্তনালীগুলোকে সংকুচিত করে এবং ব্যথা কমায়। তবে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত ক্যাফেইন মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে, তাই খুব বেশি চা বা কফি পান না করাই ভালো। একটি ছোট কফির কাপ বা গ্রিন টি মাইগ্রেনের সময় উপকারি হতে পারে।

Migraine Pain
Photo: Internet

৫. ব্যায়াম এবং ধ্যান

নিয়মিত ব্যায়াম মাইগ্রেন প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন ৩০ মিনিটের হালকা ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালনকে উন্নত করে, যা মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, ধ্যান মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে কার্যকর হতে পারে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস এবং মস্তিষ্কের শিথিলতা মাইগ্রেনের সময় মানসিক চাপ কমায় এবং ব্যথার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনে।

৬. মেন্টাল আরোমাথেরাপি ব্যবহার করুন

অ্যারোমাথেরাপি মাইগ্রেনের চিকিৎসায় একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। বিশেষ করে পিপারমিন্ট এবং ল্যাভেন্ডার তেলের গন্ধ মাথার ব্যথা দূর করতে সহায়ক। এই তেলগুলো মাথার ত্বকে বা গলায় ম্যাসাজ করে নিলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। এছাড়াও, রুমে ল্যাভেন্ডার তেল দিয়ে সেন্ট লাগিয়ে রাখা যেতে পারে, যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সহায়ক হবে।

৭. ঘুমের নিয়মিত রুটিন মেনে চলুন

অনিয়মিত ঘুমের কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে। যারা পর্যাপ্ত ঘুম পান না, তাদের মাইগ্রেনের ঝুঁকি বেশি। তাই, নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দিনে ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম মস্তিষ্ককে শিথিল রাখবে এবং মাইগ্রেনের প্রকোপ কমিয়ে দেবে।

৮. ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান

ম্যাগনেসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সহায়ক। ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন পালংশাক, বাদাম, বীজ, এবং মাছ খেলে মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে, যা মাথার ব্যথা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৯. মেডিটেশন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ

গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানো যায়। যখন মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়, তখন ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন এবং শ্বাস ছাড়ুন। এটি মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক হয়। প্রতিদিন নিয়মিত কিছু সময় ধ্যান এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ চর্চা করুন, যা মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

১০. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন

মাইগ্রেনের সময় অতিরিক্ত পরিশ্রম বা মানসিক চাপ ব্যথাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ব্যথা শুরু হলে সবকিছু থেকে বিরতি নিয়ে শুয়ে পড়ুন এবং বিশ্রাম নিন। যত বেশি শিথিল থাকবেন, তত দ্রুত ব্যথা কমে আসবে।

মাইগ্রেইন পেইন
Photo: Internet

উপসংহার

মাইগ্রেন পেইন অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক হলেও কিছু সহজ উপায় এবং ঘরোয়া প্রতিকার প্রয়োগ করে আপনি এটি দ্রুত কমাতে পারবেন। পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত ঘুম, ধ্যান এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন পদ্ধতি মেনে চললে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাছাড়া, যদি ব্যথা নিয়মিত হয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুনঃ স্মার্টফোন এর ব্যাটারি লাইফ বাড়ানোর ৭টি কার্যকরী টিপস

ঘর সাজাতেঃ Canvaswala || ব্যবসা বাড়াতেঃ Fixcave

Leave a Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *