পাসপোর্ট তৈরি এর জন্য প্রয়োজনীয় নথি, আবেদন প্রক্রিয়া, এবং টিপস
বাংলাদেশে পাসপোর্ট তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, বিশেষ করে যখন আপনি আন্তর্জাতিক ভ্রমণ, উচ্চ শিক্ষা বা চাকরির জন্য বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। পাসপোর্ট তৈরি করা এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে, তবে সঠিক নথিপত্র, নির্দেশিকা এবং সময় মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। এখানে পাসপোর্ট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ও কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১. পাসপোর্টের ধরন
বাংলাদেশে সাধারণত দুটি ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়:
- মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP): অধিকাংশ নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য সাধারণ পাসপোর্ট।
- ই-পাসপোর্ট: নতুন ধরনের পাসপোর্ট, যা বেশি নিরাপত্তা ও সুবিধা প্রদান করে।
২. প্রয়োজনীয় নথিপত্র
পাসপোর্ট তৈরি করতে হলে নিচের নথিগুলোর প্রয়োজন হবে:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম সনদ: আপনার পরিচয় প্রমাণ করার জন্য NID অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার NID না থাকে, তাহলে জন্ম সনদ জমা দিতে হবে।
- পূর্ববর্তী পাসপোর্ট (যদি থাকে): যদি আপনার আগের পাসপোর্ট থাকে, তাহলে সেটি জমা দিতে হবে।
- নাগরিকত্ব সনদপত্র: স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রাপ্ত নাগরিকত্ব সনদ।
- আবেদনকারী ও অভিভাবকের তথ্য (প্রয়োজন হলে): যদি আবেদনকারী নাবালক বা নাবালিকা হয়, তাহলে অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিতে হবে।
- বৈবাহিক সনদপত্র (প্রয়োজনে): বিবাহিত হলে বৈবাহিক সনদপত্রের কপি।
৩. পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ
পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য প্রথমে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। বর্তমানে ই-পাসপোর্ট এবং MRP উভয়ের জন্যই অনলাইন আবেদন করার সুবিধা রয়েছে। ই-পাসপোর্টের জন্য www.epassport.gov.bd এবং MRP-এর জন্য www.passport.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। অনলাইন ফরমে সঠিক তথ্য প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি।
৪. ছবি তোলা এবং আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক)
পাসপোর্ট আবেদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ছবি তোলা এবং আঙুলের ছাপ প্রদান করা। আবেদন ফরম জমা দেওয়ার পরে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার ছবি তোলা হবে এবং আঙুলের ছাপ নেয়া হবে। এ কারণে ফরম পূরণের পরে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।
৫. ফি পরিশোধ
পাসপোর্ট তৈরির জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি পরিশোধ করতে হবে। সাধারণত পাসপোর্টের ধরন এবং প্রসেসিং টাইম অনুযায়ী ফি নির্ধারণ করা হয়। ই-পাসপোর্ট এবং MRP-এর ফি একটু ভিন্ন হতে পারে। নিম্নে কিছু তথ্য দেওয়া হলো:
- অতিরিক্ত ফি: যদি আপনি জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট তৈরি করতে চান, তাহলে অতিরিক্ত ফি পরিশোধ করতে হবে।
- ফি জমা দেওয়ার স্থান: ফি জমা দিতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে।
৬. ডেলিভারি এবং পাসপোর্ট সংগ্রহ
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এবং সমস্ত নথি যাচাই করা হলে আপনার পাসপোর্ট প্রস্তুত হবে। সাধারণত পাসপোর্ট তৈরি করতে ২-৪ সপ্তাহ সময় লাগে। আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে এটি সংগ্রহ করতে পারেন, অথবা পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য আপনার ঠিকানায় পাঠানো হবে।
৭. কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- ফরম পূরণের সময় সঠিক তথ্য দিন: আপনার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ ইত্যাদি সঠিকভাবে প্রদান করুন।
- যথাসময়ে পাসপোর্ট নবায়ন করুন: পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগে নবায়ন করতে হবে।
- যেকোনো আপডেট সম্পর্কে তথ্য রাখুন: আবেদন করার পরের আপডেট সম্পর্কে ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
উপসংহার
পাসপোর্ট তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, এবং সঠিক নথিপত্র এবং নির্দেশনা অনুসরণ করলে এটি সহজেই করা যায়। অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন পাসপোর্ট তৈরি করা অনেক সহজ এবং দ্রুত হয়েছে। পাসপোর্ট পাওয়ার পরে তা সংরক্ষণে বিশেষ যত্ন নিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় এটি অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ পরিবার নিয়ে ভ্রমণের সেরা ৫টি গন্তব্য
ঘর সাজাতেঃ Canvaswala || ব্যবসা বাড়াতেঃ Fixcave
Leave a Reply