২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল দেশে এক অভূতপূর্ব বিপর্যয় তৈরি করেছে। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে প্রায় 19 শতাংশ, যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
👉 11 টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫৮.৮৩ শতাংশ — যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
📊 এবারের ফলাফলের সারসংক্ষেপ
- মোট পরীক্ষার্থী: 12,51,111 জন
- উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী: ৫৮.৮৩%
- গত বছরের তুলনায় পাসের হার কম: 18.95%
এই ফলাফল প্রকাশ করা হয় 16 অক্টোবর সকাল 10 টা থেকে একযোগে সব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এসএমএসের মাধ্যমে।
😟 শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের উদ্বেগ
শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা মনে করছেন, এত বড় মাত্রায় ফলাফল খারাপ হওয়ার পেছনে থাকতে পারে একাধিক কারণ—
- প্রশ্নপত্রের মান বা কঠিনতা,
- নতুন পরীক্ষাপদ্ধতি,
- কিংবা শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির ঘাটতি।
এই ফলাফল শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের মনোভাব ও পড়ালেখার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি।
🔁 পুনঃনিরীক্ষণ আবেদন: বদলে গেছে নিয়ম! জানুন ধাপে ধাপে
২০২৫ সালের এইচএসসি ফলাফলে যারা প্রত্যাশিত ফল পাননি, তারা খাতা চ্যালেঞ্জ বা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন। তবে এবার প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি অনলাইন-ভিত্তিক, এবং এতে এসেছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।

💻 নতুন নিয়মে আবেদন প্রক্রিয়া (ধাপে ধাপে)
ওয়েবসাইটে প্রবেশ
👉 ভিজিট করুন: https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd/
এখানে প্রবেশ করে রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং বোর্ডের নাম নির্বাচন করুন।
২️⃣ তথ্য জমা ও মোবাইল নম্বর প্রদান
তথ্য পূরণ শেষে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করুন এবং একটি সচল মোবাইল নম্বর দিন। পুনঃনিরীক্ষণের ফলাফল সেই নম্বরে এসএমএসে পাঠানো হবে।
৩️⃣ বিষয় নির্বাচন
আপনি যেসব বিষয়ে পুনঃনিরীক্ষণ করতে চান, সেগুলো নির্বাচন করুন।
💰 ফি প্রদান পদ্ধতি
- প্রতিটি পত্রের ফি: 150 টাকা
- দ্বিপত্র বিষয় (যেমন বাংলা): উভয়পত্রে আবেদন করতে হবে।
- পেমেন্ট গেটওয়ে: বিকাশ, নগদ, রকেট, সোনালি সেবা ও টেলিটক সিমের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা যাবে।
বিস্তারিত ধাপ জানতে ওয়েবসাইটের ‘হেল্প’ বাটনে ক্লিক করুন।
📝 আবেদন চূড়ান্তকরণ ও পরিবর্তনের নিয়ম
1. ফি পরিশোধের পর “জমা দিন” বাটনে ক্লিক করুন।
2. নতুন কোনো বিষয় যোগ করতে চাইলে আবারও একই প্রক্রিয়ায় তা করা যাবে।
3. ফি পরিশোধের আগে ভুল হলে “মুছে ফেলুন” বাটনে ক্লিক করে পরিবর্তন করা সম্ভব।
⚠️ একবার ফি জমা দিলে সেই বিষয় আর বাতিল করা যাবে না।
🌐 সম্পূর্ণ অনলাইন প্রক্রিয়া: শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ সমাধান
আগের মতো টেলিটক সিমে এসএমএস না পাঠিয়ে এখন সব আবেদন করা যাচ্ছে অনলাইনে। এতে সময় বাঁচছে এবং আবেদন প্রক্রিয়াও হয়েছে আরও স্বচ্ছ ও সহজ।
শিক্ষা বোর্ডের আশা, এই নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের জন্য ফল পুনঃনিরীক্ষণ প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর ও সুবিধাজনক করে তুলবে।
📌 উপসংহার
২০২৫ সালের এইচএসসি ফলাফল দেশের শিক্ষাজগতে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পাসের হার কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি। অন্যদিকে, যারা ফলাফল নিয়ে হতাশ, তারা দ্রুত অনলাইন পুনঃনিরীক্ষণ আবেদন করে তাদের ফল যাচাইয়ের সুযোগ নিতে পারেন।


Leave a Reply