স্ক্যাবিসxr:d:DAF3Un6MbL4:72,j:3203597958133678379,t:23121822

পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে স্ক্যাবিস। বাঁচার উপায় জানুন

By Adivai_Admin May 17, 2025 No Comments 4 Min Read

পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে স্ক্যাবিস। বাঁচার উপায় জানুন

বর্তমানে পুরো বাংলাদেশে একটি চর্মরোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যার নাম স্ক্যাবিস। এই রোগটি অনেকেই প্রথমে বুঝতে পারেন না, ফলে এটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। চুলকানি, ত্বকে র‍্যাশ ও অস্বস্তি এই রোগের প্রধান লক্ষণ। চলুন জেনে নেই স্ক্যাবিস কী, এটি কিভাবে ছড়ায়, লক্ষণ কী, এবং কীভাবে আপনি নিজে ও আপনার পরিবারকে এই রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন।

স্ক্যাবিস কী? স্ক্যাবিস একটি সংক্রামক চর্মরোগ যা “Sarcoptes scabiei” নামক একটি ক্ষুদ্র আকারের পরজীবী মাইটের কারণে হয়। এই মাইটটি মানুষের ত্বকের নিচে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ডিম পাড়ে, ফলে ত্বকে তীব্র চুলকানি ও লালচে দানা তৈরি হয়। এটি সহজেই একজন থেকে অন্যজনের মাঝে ছড়াতে পারে, বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শে এলে।

বাংলাদেশে স্ক্যাবিসের বর্তমান অবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় স্ক্যাবিসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। বিশেষ করে স্কুল, মাদ্রাসা ও হোস্টেলগুলোতে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অপর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা এবং জনসমাগমপূর্ণ স্থানগুলোতে এটি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

স্ক্যাবিস কিভাবে ছড়ায়?

স্ক্যাবিস সাধারণত নিচের উপায়গুলোতে ছড়াতে পারে:

  1. একজন আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শে এলে।
  2. আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত পোশাক, চাদর, তোয়ালে বা বিছানায় শোয়া।
  3. দীর্ঘ সময় ধরে একই ঘরে থাকা বা ঘনিষ্ঠভাবে বসবাস করা।

স্ক্যাবিসের লক্ষণগুলো কী কী?

স্ক্যাবিসের কিছু সাধারণ লক্ষণ নিচে দেওয়া হলো:

  • তীব্র চুলকানি (বিশেষ করে রাতে বেড়ে যায়)
  • ত্বকে ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ
  • হাতের আঙুলের ফাঁকে, কব্জি, কোমর, কনুই, বগল, স্তনের নিচে ও যৌনাঙ্গের চারপাশে দানা
  • আক্রান্ত স্থানে লালচে দাগ ও চুলকানির কারণে ঘা হওয়া

স্ক্যাবিসে কারা বেশি ঝুঁকিতে?

  • শিশুরা ও বয়স্করা
  • যারা গোষ্ঠীভিত্তিক পরিবেশে থাকেন (যেমন হোস্টেল, আশ্রয়কেন্দ্র)
  • যাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার সুযোগ কম
  • দুর্বল ইমিউন সিস্টেমযুক্ত ব্যক্তি

চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

স্ক্যাবিসের চিকিৎসা সহজ হলেও দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি ছড়িয়ে পড়ে এবং জটিল আকার ধারণ করতে পারে। স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়:

  1. চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে স্ক্যাবিস প্রতিরোধক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন (যেমন: Permethrin 5% Cream)।
  2. পুরো শরীরে (গলা থেকে পা পর্যন্ত) একবারে লাগাতে হয় এবং ৮-১৪ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলতে হয়।
  3. আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সবাইকে একই সাথে চিকিৎসা নিতে হয়।
  4. ব্যবহৃত জামাকাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে।

স্ক্যাবিস প্রতিরোধে করণীয়

  • নিয়মিত গোসল করুন এবং পরিষ্কার পোশাক পরুন
  • ব্যক্তিগত জিনিসপত্র অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি না করুন
  • জনসমাগমপূর্ণ স্থান থেকে সাবধান থাকুন
  • ঘর পরিষ্কার রাখুন এবং বিছানা, চাদর রোদে শুকান
  • শিশুদের স্কুলে পাঠানোর আগে পর্যবেক্ষণ করুন

স্ক্যাবিস সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা

  1. এটা শুধু গরিবদের রোগ — সত্য নয়। যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন যদি সংস্পর্শে আসেন।
  2. বারবার হাত ধুলেই এটি রোধ করা যায় — শুধু হাত ধোয়া যথেষ্ট নয়, পুরো শরীরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জরুরি।
  3. এটি নিজে নিজে সেরে যায় — চিকিৎসা ছাড়া স্ক্যাবিস সেরে যায় না, বরং ছড়িয়ে পড়ে।

চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া কেন জরুরি?

অনেকে স্ক্যাবিসকে সাধারণ চুলকানি বা অ্যালার্জি ভেবে অবহেলা করেন। তবে ভুল চিকিৎসা বা দেরিতে চিকিৎসা নিলে এটি গুরুতর চর্ম

রোগে পরিণত হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ ব্যবহার করলে ত্বকে জ্বালাপোড়া, লালচে দাগ বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।

শেষ কথা স্ক্যাবিস একটি সহজে ছড়ানো রোগ হলেও সঠিক জ্ঞান ও সচেতনতা থাকলে এটি প্রতিরোধযোগ্য। যদি আপনার বা আপনার পরিবারের কারো মাঝে উপরের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। জনসচেতনতা ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে এই রোগের বিস্তার রোধ করতে পারি।

নিজে সুস্থ থাকুন, অন্যকেও সচেতন করুন।

WHO on Scabies: https://www.who.int/news-room/fact-sheets/detail/scabies

CDC Scabies Overview: https://www.cdc.gov/parasites/scabies/

স্ক্যাবিস কি ছোঁয়াচে রোগ?

হ্যাঁ, স্ক্যাবিস খুব দ্রুত ছড়ায়, বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শ বা আক্রান্তের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহারের মাধ্যমে।

স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে কতদিনের মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা উচিত?

যত দ্রুত সম্ভব। দেরি করলে এটি পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যেও ছড়াতে পারে।

শুধুমাত্র চুলকানিই কি স্ক্যাবিসের প্রধান লক্ষণ?

না। চুলকানির পাশাপাশি লাল ফুসকুড়ি, ত্বকে র‍্যাশ, এবং তীব্র জ্বালাপোড়াও হতে পারে।

স্ক্যাবিস কি ঘরোয়া উপায়ে ভালো হয়?

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘরোয়া উপায়ে নির্ভর না করাই ভালো। স্ক্যাবিসের নির্দিষ্ট ওষুধ ও পদ্ধতি আছে।

লিখেছেনঃ Faisal Hossan (Adi)

আরও পড়ুনঃ চাকরীর ইন্টারভিউ প্রিপারেশন- যে কথা বললে চাকরী হবেনা

অনলাইন বিজনেসের সাপোর্ট পেতেঃ Fixcave Agency

Leave a Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *